পৃথিবীতে প্রায় ছয়শ কোটি মানুষের বাস। তবে ভেবে দেখার মতো ব্যাপার হলো এদের কারও চেহারাই কারো সাথে মিলে না। আশ্চর্য্য, তাই না? জানেন কি, কেন এমন হয়?
একটা মানুষ দেখতে কেমন হবে, এই সব তথ্য রাখা থাকে তার ডি.এন.এ এর মধ্যে। প্রতিটা মানুষের ডি.এন.এ ২৩ টি টুকরাতে বিভক্ত। এই প্রতিটা টুকরোকে বলা হয় এক একটা “ক্রোমোসম“। প্রতিটা ক্রোমোসম আবার ২ কপি করে থাকে, এক কপি সে পায় তার বাবার কাছ থেকে আর আরেক কপি পায় তার মায়ের কাছ থেকে।
অর্থাৎ, মানুষের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোসম থাকে, প্রত্যেক জোড়ার ১টা আসে মায়ের কাছ থেকে, আর অন্যটা আসে বাবার কাছ থেকে। বাবার শরীরে ২৩ জোড়ার মধ্যে শুধু ১জোড়া ক্রোমোসম দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে একটি এসেছে দাদার কাছ থেকে, আরেকটি দাদীর কাছ থেকে।
এখন পুরুষের শরীর হতে যখন শুক্রানু (sperm cell) বা নারীর শরীর হতে ডিম্বানু (egg cell) তৈরী হয়, তখন প্রতি জোড়া ক্রোমোসম নিজেদের মধ্যে কিছু অংশ বিনিময় করে নতুন কম্বিনেশনের এক জোড়া ক্রোমোসম তৈরী করে। এই ঘটনা কেবলা হয় Genetic Crossing Over ।
এখন এই নতুন চেহারার ক্রোমোসোম জোড় থেকে যে কোন একটি শুক্রানু/ডিম্বানু তে যায়। এই ঘটনা কে বলা হয় Independent Assortment . একইভাবে ২৩ জোড়া ক্রোমোসোমেই Genetic Crossing Over এর মাধ্যমে নতুন চেহারার ক্রোমোসোম তৈরী হয়, এবং প্রতি জোড়া থেকে যে কোন একটা শুক্রানু/ডিম্বানু তে যায়।
এর ফলে পুরুষের শরীরে ৮ মিলিয়ন ধরণের শুক্রানু ও নারীর শরীরে ৮ মিলিয়ন ধরনের ডিম্বানু তৈরী হতে পারে। যৌন মিলনের ফলে, যে কোন একটি শুক্রানু যে কোন একটি ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চার জন্ম দেয়। ৮ মিলিয়ন ধরণের শুক্রানু আর ৮ মিলিয়ন ধরণের ডিম্বানুর মিলনের ফলে ৬৪ ট্রিলিয়ন ধরনের চেহারার বাচ্চার জন্ম হতে পারে।
অর্থাৎ কারো ৬৪ ট্রিলিয়ন বাচ্চা হলেও কারো চেহারা হুবহু কারো মত হবেনা! জমজ হলে অবশ্য ভিন্ন কথা এবং প্রত্যেকের চেহারাতেই থাকবে তার মা, বাবা, নানা, নানী, দাদা ও দাদীর চেহারার কম- বেশি ছাপ!